বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় চার (০৪) লক্ষ মানুষ সর্পদংশনের শিকার হয় এবং প্রায় সাত হাজার পাঁচশত (৭,৫০০) জন মানুষ মারা যায়। বেশিরভাগ মানুষ মারা যায় রোগীকে ওঝা বা বেদের মাধ্যমে অবৈজ্ঞানিক উপায়ে চিকিৎসা করিয়ে হাসপাতালে নিতে দেরি করায়। তাই সাপ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য জানা ও সতর্কতা, সর্পদংশন থেকে জীবন রক্ষা করতে পারে। এই উদ্দেশ্যেকে সামনে রেখেই বন অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন টেকসই বন ও জীবিকা (সুফল) প্রকল্পের অর্থায়নে ইনোভেশন গ্রান্টের আওতায় স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় দেশে প্রথম সর্পদংশনে সচেতনতা, উদ্ধার ও সুরক্ষা নামক এই মোবাইল অ্যাপটি তৈরী করা হয়েছে।
এই অ্যাপে দশটি (১০) গুরুত্বপূর্ণ ফিচার রয়েছে। এই অ্যাপের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ খুব সহজেই পনেরটি (১৫) বিষধর ও পনেরটি (১৫) নির্বিষ ও মৃদু বিষধর সাপের প্রজাতির সামগ্রিক বিবরণ জানতে পারবে। এছাড়া সর্প দংশন পরবর্তী লক্ষণ, উপসর্গ ও করণীয়; সর্প দংশনের প্রাথমিক চিকিৎসা; সর্প দংশনের চিকিৎসা সেবা ও এন্টিভেনম প্রাপ্যতার বিষয়ে দেশের সকল জেনারেল হাসপাতাল (৬০টি), মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (৩৬টি), উপজেলা হাসপাতালের (৪৩০টি) মোবাইল নাম্বার ও গুগল ম্যাপ সংযুক্ত করা হয়েছে, যাতে জনসাধারণ সহজেই সর্প দংশনের পর সহজেই হাসপাতালের সাথে যোগাযোগ করতে পারে; সর্প দংশন ও বন্যপ্রাণী উদ্ধার সম্পর্কিত যে কোন তথ্য জানতে ও জানোতে রয়েছে যোগাযোগ সম্বলিত ফিচার; জেলা ভিত্তিক সাপ উদ্ধারের জন্য প্রশিক্ষন প্রাপ্ত স্নেক রেসকিউয়ারের তালিকা; সাপ সম্পর্কিত প্রচলিত কুসংস্কার, গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও ও সাপের গুরুত্ব, বাংলাদেশের সাপের প্রজাতির ছবিসহ তালিকা ও জাতীয় জরুরী নাম্বারসহ প্রভৃতি বিষয়সমূহ এই অ্যাপে বিদ্যমান আছে।
সর্প দংশন একটি অপ্রত্যাশিত দূর্ঘটনা। সাপ দিন ও রাতে উভয় সময়েই দংশন করে থাকে। আমাদের দেশে বর্ষাকালে সাপের উপদ্রব বাড়ে। বর্ষাকালে সর্পদংশনের সংখ্যা বেশী ঘটে, কারণ বর্ষায় পানিতে ইঁদুরের গর্তসহ চারিদিক ডুবে যাওয়ায় সাপ শুকনো জায়গার খোঁজে বাড়ির আশেপাশে উঁচু স্থানে আশ্রয় নেয়। বাংলাদেশে সাধারণত সর্পদংশনের শিকার হয় গ্রাম অঞ্চলের খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষজন। সাপ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে রয়েছে অনেক ভ্রান্ত ধারণা ও কুসংস্কার। এসব ভ্রান্ত ধারণা ও কুসংস্কার দূরিকরণে এবং জনসাধারণকে সর্প দংশন পরবর্তী করণীয় সর্ম্পকে সচেতনতাই এই অ্যাপের মূল উদ্দ্যেশ।
Oxirgi yangilanish
17-may, 2025