সুদীপ্ত সোম এর এবারের অভিযান লাল জোনাকির দেশ ইথিওপিয়ায়। আফ্রিকার যে দেশে পদে পদে মৃত্যু তোমাদের পিছু নিতে পারে। রুক্ষ প্রান্তরের বুকে পানীয় জলের সঞ্চয়টুকু নিঃশেষ হয়ে গেলে কেউ তোমাদের সামনে এক গ্লাস তৃষ্ণার জলও বাড়িয়ে দেবে না। আফ্রিকার ভয়াল ভয়ংকর জঙ্গলের মাঝে হিংস্র পশুর আক্রমণের মুখে পড়লে কেউ তোমাদের বাঁচাতেও আসবে না। সংকীর্ণ নদী অতিক্রম করতে গেলে যেকোনো সময় কুমিরের আক্রমণে শেষ হয়ে যেতে পারে তোমাদের জীবন। সেই সাথে আছে নিষ্ঠুর আল শাবাব জঙ্গিগোষ্ঠীর আক্রমণের আশংকা। যাদের মুখোমুখি হলে কয়েকটা বুলেট তোমাদের শরীর চোখের পলকে ঝাঁজরা করে দিতে পারে। আর মারণ তেজষ্ক্রিয়তাপূর্ণ হেরিথিয়াম বৃক্ষের কথা আর নতুন করে কি-ই বা বলার থাকতে পারে! পরিশেষে আছে তিন অক্ষরের ছোট্ট একটা নাম 'গ্রি-ফি-ন'! যার অতৃপ্ত আত্মা দেশ থেকে দেশান্তরে পাড়ি দিয়ে তোমাদের প্রাণবায়ুটুকু নিঃশেষ করে দিতে পারে। তবু ইথিওপিয়াকে অভিশাপমুক্ত করার লক্ষ্যে পা রেখেছিলাম সেই দেশে। যেখানে আবেনা বন্ধুর মতো সর্বদা আমার দিকে তার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। সেই চরম প্রতিকূলতার মুখে আমি কি পারব এই অভিযান শেষ করে নিরাপদে দেশে ফিরে আসতে? নাকি আবেনা বা আমার অন্তর্জলি যাত্রা লেখা থাকবে দুর্গম ইথিওপিয়ার প্রান্তরে ?
সেই ইতিহাস জানতে গেলে তোমাকে এই কাহিনি পড়তেই হবে। তোমরা হবে সেই ভয়ংকর অভিযানের সাক্ষী।
চলো ঘুরে আসি সেই অভিশপ্ত প্রান্তর থেকে, হৃৎস্পন্দন যেখানে ঘড়ির সেকেন্ড-এর কাঁটার থেকেও অনেক দ্রুত তার অস্তিত্ব জানান দেয়... 'লাল জোনাকির দেশে'...
সুদীপ্ত কাহালী - জন্ম ৭ অক্টোবর ১৯৮০ কুচবিহারে। স্বর্গীয় শিশু সাহিত্যিক তথা প্রাবন্ধিক সুবিমল কাহালীর সুযোগ্য সন্তান। ছাত্র জীবনের বেশির ভাগ সময়টাই তার কেটেছে দক্ষিন ২৪ পরগনা জেলায়। কলকাতা বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে সাহিত্যের স্নাতক, ফকির মোহন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিভাগে স্নাতক এবং সমাজ বিদ্যায় স্নাতকোত্বর (M.S.W.) ডিগ্রি লাভ করার পর আইনজীবী রূপে পেশার জগতে পদার্পণ। পিতার প্রেরণায় সাহিত্য চর্চার সূত্রপাত স্কুল জীবন থেকেই। মূলত নাট্যকার এবং স্ক্রিপ্ট রাইটার রূপেই সাহিত্য জগতে তাঁর পা রাখা। তার রচিত জনপ্রিয় নাটকগুলোর মধ্যে হাম সব চোর হ্যায়, বাবা বন্ধেশ্বর সংবাদ, বাঁচতে চাই, বন্ধন, গলার কাঁটা, রক্তে রাঙা শপথ উল্লেখের দাবি রাখে। সামাজিক পটভূমিকায় তার লেখার মধ্যে সমাজের নিপীড়িত, অবহেলিত মানুষের প্রতি সহমর্মিতা বারেবারে ফুটে উঠেছে। বর্তমানে যে সকল সাহিত্যিক বাংলা ভৌতিক তথা অতিপ্রাকৃত সাহিত্যের জগতে বৈচিত্রের ছোঁয়া এনে দিয়েছেন, তাদের মধ্যে তিনি উল্লেখযোগ্য। তার ভৌতিক সাহিত্যের পটভূমিকা প্রায়শই দেশের সীমারেখা অতিক্রম করে বিদেশে ছুটে গেছে প্রানবন্ত বর্ণনাকে সঙ্গী করে। বাংলা ভৌতিক সাহিত্যে রিপোর্টার অফ প্যারা নর্মাল টপিক রূপে তার সৃষ্ট চরিত্র ‘সুদীপ্ত সোম' চূড়ান্ত ভাবেই অভিনব।